রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুসরণ করা তাঁর উপর ঈমান আনার চূড়ান্ত প্রমাণ, সুতরাং তাঁর আদেশ মান্য না করে, তাঁর নিষেধ থেকে বিরত না থেকে এবং তাঁর সুন্নতের অনুসরণ না করে তাঁর উপর ঈমান আনার দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবি। কেননা ঈমান হলো অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ করা এবং তা কাজে পরিণত করা।
যারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ভালোবাসার দাবি করে আল্লাহ তা‘আলা তাঁদেরকে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে তাঁদের দাবীর সত্যতা যাচাই করেন, এবং নবীজির অনুসরণের সাথে তাঁর ভালোবাসাকে সম্পৃক্ত করে ইরশাদ করেনঃ (হে নবী আপনি) বলুন যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস, তাহলে আমাকে অনুসরণ কর, যাতে আল্লাহও তোমাদিগকে ভালোবাসেন এবং তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাকারী দয়ালু। (হে নবী আপনি) বলুনঃ আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করো। বস্তুতঃ যদি তারা বিমুখতা অবলম্বন করে, তাহলে আল্লাহ কাফেরদিগকে ভালোবাসেন না। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৩১-৩২]
আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ রাসূল তোমাদেরকে যা দেন,তা গ্রহণ কর এবং যা থেকে নিষেধ করেন,তা থেকে বিরত থাক। [সূরা আল-হাশর, আয়াত: ৭]
আল্লাহ তা‘আলা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তাঁর রহমত পাওয়ার উপযোগী একমাত্র তারাই যারা অনুসরণ ও আনুগত্য করে, তিনি বলেনঃ আমার করুণা সব কিছুকেই পরিবেষ্টন করে। সুতরাং আমি সেটি নির্ধারিত করেছি তাঁদের জন্য যারা আমাকে ভয় করে,যাকাত দান করে এবং যারা আমার আয়াতসমুহের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে। এবং সেসমস্ত লোক যারা আনুগত্য অবলম্বন করে এ রাসূলের যিনি উম্মী নবী। [সূরা আল-আরাফ, আয়াত: ১৫৬, ১৫৭]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমি তোমাদেরকে যেসব বিষয় নিষেধ করেছি, তা থেকে বিরত থাক। আর যেসব বিষয়ে আদেশ করেছি, যথাসম্ভব তা পালন কর। (বুখারী ও মুসলিম)। এ হাদিসটি ইসলামের একটি অন্যতম মূলনীতি।
তেমনিভাবে যারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হিদায়াত থেকে দূরে সরে যায় এবং তাঁর আদেশ অমান্য করে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির ধমকি দিয়েছেন। তিনি বলেনঃ অতএব যারা তাঁর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে, তারা এ বিষয়ে সতর্ক হোক যে বিপর্যয় তাদেরকে স্পর্শ করবে অথবা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তাদেরকে গ্রাস করবে। [সূরা আন-নূর, আয়াত: ৬৩]
যারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হিদায়াত থেকে দূরে সরে যায় তাদের বিভিন্ন প্রকার রয়েছে, এক প্রকার হলো যারা তাঁর কথার কোন গুরুত্ব দেয় না। আর এক প্রকার হলো যারা দাবি করে যে কুরআনই যথেষ্ট, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীসের কোন প্রয়োজন নেই। আর এক প্রকার হলো যারা হাদীসের সমালোচনা করে এবং বলে যে সেটি এই সময়ে প্রযোজ্য নয়। তাদের প্রত্যেকেই নিম্নের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারে নিঃ (হে নবী আপনি) বলুন যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস, তাহলে আমাকে অনুসরণ কর, যাতে আল্লাহও তোমাদিগকে ভালোবাসেন এবং তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাকারী দয়ালু। (হে নবী আপনি) বলুনঃ আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করো। বস্তুতঃ যদি তারা বিমুখতা অবলম্বন করে, তাহলে আল্লাহ কাফেরদিগকে ভালোবাসেন না) । [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৩১-৩২]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ সেই পবিত্র সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ,তোমাদের কেউ প্রকৃত মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার কাছে তার পিতা ও সন্তানের চেয়ে বেশি প্রিয় হই। (সহীহ বুখারী)।